গুঞ্জনই সত্যি হলো। জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য টি ২০ অধিনায়ক হিসাবে নুরুল হাসান সোহানকে বেছে নিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ব্যাট হাতে বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লার জায়গা হয়নি জিম্বাবুয়ে সফরে টি ২০ দলে।
বিশ্রামের আড়ালে কার্যত তাকে বাদই দেওয়া হলো। সাকিব আল হাসান আগেই এই সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছেন। দলে নেই মুশফিকুর রহিমও। তাকেও বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তবে সফরের ওয়ানডে দলে আছেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক।
নতুন চেহারার টি ২০ দলে সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে নুরুল হাসানকেই অধিনায়ক হিসাবে যোগ্য মনে করছে বিসিবি। শুক্রবার ঢাকার একটি হোটেলে নির্বাচক দলের তিন সদস্য, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন ও মাহমুদউল্লাহ আলোচনায় বসেন।
সভা শেষে জালাল ইউনুস জানান, ‘এই সিরিজে নতুন একটি দল পাঠাচ্ছি আমরা। ২৮ বছর বয়সি কিপার-ব্যাটার নুরুল হাসান দেশের হয়ে ৩৩টি টি ২০ খেলেছেন। সর্বোচ্চ রান ৩০*। মাঠে তার নিবেদন, দলকে চাঙ্গা রাখা এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা থেকেই বোর্ড নুরুল হাসানকে বেছে নিয়েছে।
পবিত্র হজে যাওয়ার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজে সবশেষ সিরিজে না খেলা অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটার মুশফিক কয়েকদিন ধরেই মিরপুরে অনুশীলন করছেন। তবে জিম্বাবুয়ে সফরের টি ২০ দলে নেই তিনি।
জালাল ইউনুস বলেন, ‘এই দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমরা নুরুল হাসানকে অধিনায়কত্ব দিয়েছি। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত।’ তিনি বলেন, ‘টি ২০ দল নিয়ে আমরা কয়েকদিন ধরে আলোচনা করছিলাম।
কারণ টেস্ট ও টি ২০ ক্রিকেটে আমরা ধারাবাহিক উন্নতি করতে পারছি না। তাই এই টি ২০ সিরিজ নিয়ে বোর্ডের অনেক চিন্তাভাবনা ছিল আগে থেকেই। আলোচনাতে মাহমুদউল্লাহও ছিল। কয়েকদিন ধরেই টি ২০ নিয়ে আমরা আলোচনা করছি।
সবশেষ জিম্বাবুয়েতে নতুন দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। গত দু’বছর ধরে যারা দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছেন তাদের নিয়েই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি ২০ দল সাজানো হয়েছে। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব চোটে পড়ায় ২০১৮ সালে দেশের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজে টি ২০ দলের নেতৃত্ব পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর সাকিব নিষেধাজ্ঞায় পড়লে স্থায়ীভাবেই মাহমুদউল্লাহকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জয়ের হিসাবে তিনিই বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল টি ২০ অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ৪৩টি ম্যাচের মধ্যে ১৬টি জিতেছে, ২৬টিতে হার ও একটি পরিত্যক্ত হয়। অধিনায়ক হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহর পারফরম্যান্সও খারাপ হয়ে যায়।
আপাতত মাহমুদউল্লাহকে বিশ্রাম দেওয়া হলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নুরুল হাসান ভালো করতে পারলে বিশ্বকাপেও তাকে নেতৃত্ব দেওয়া হতে পারে। বোর্ডের চাওয়া অবশ্য টি ২০ বিশ্বকাপে সাকিবের নেতৃত্বে দল পাঠাবে। সাকিব এই সিরিজে না থাকায় সুযোগ পেয়েছেন নুরুল হাসান।
সে ক্ষেত্রে মাহমুদউল্লাহর টি ২০ অধিনায়কত্ব অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল কালই। ওয়ানডে সিরিজের জন্য অবশ্য পূর্ণ শক্তির দল সাজিয়েছে বাংলাদেশ। ১৬ সদস্যের দলে ফিরেছেন মুশফিক ও তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েছেন পেসার ইবাদত হোসেন।
ইয়াসির আলী ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন পুরো ফিট না হওয়ায় দলে ফিরতে পারেননি। জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ তিনটি করে ওয়ানডে ও টি ২০ ম্যাচ খেলবে। ৩০ জুলাই শুরু হবে টি ২০ সিরিজ। সব ম্যাচ হবে হারারেতে।
বাংলাদেশ ওয়ানডে দল : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, এনামুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন ও তাইজুল ইসলাম।
বাংলাদেশ টি ২০ দল : মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক, নুরুল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, মোসাদ্দেক হোসেন, নাজমুল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও পারভেজ হোসেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।